কোন দিনে সফর করা উত্তম ও সফর কত প্রকার।


কোন দিবসে সফর করা উত্তম

বৃহস্পতিবার ও শনিবার ভ্রমণে বের হওয়া উত্তম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দিবসে সফরে বের হওয়া পছন্দ করতেন ।

(তাখরীজুল ইরাকী আলাল ইয়া-২/৩৫১)



সফর কত প্রকার

উদ্দেশ্যগত দিক থেকে সফর সাধারণত দু প্রকার: খালেছ দীনী সফর ও দুনিয়াবী উদ্দেশ্যের সফর। দীনী সফর, যেমন হজ্জ, জিহাদ, দাওয়াত, ইলম অর্জন, ওলামা ও নেককারদের সাথে সাক্ষাতের জন্য সফর করা ইত্যাদি নিরেট দীনী সফর। অনুরূপভাবে কোন মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করার জন্য সফর করাও দীনী সফরের অন্তর্ভূক্ত। চাই সে আত্মীয় কিংবা অনাত্মীয় হোক না কেন। দীনী সফরের ক্ষেত্রে সফরের উদ্দেশ্যটি যে পর্যায়ের গুরুত্ব বহন করে, সফরটাও সে পর্যায়ের হবে। অর্থাৎ কোন ফরজ কাজের উদ্দেশ্যে সফর অনিবার্য হলে ঐ সফরটাও ফরজ বলে বিবেচিত হবে। অনুরূপভাবে ওয়াজিবের জন্য হলে ওয়াজিব, মুস্তাহাবের জন্য হলে মুস্তাহাব হিসেবে বিবেচিত হবে। এ সব ধরণের সফরই মহাপুণ্যময় সফর হিসেবে পরিগণিত।
দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে সফর, যেমন ব্যবসা বাণিজ্য কিংবা জীবিকা উপার্জন বা অন্য কোন জায়েয কাজের জন্য সফর করা। এমনি ভাবে শরীয়তসমর্থিত বিনোদনের জন্য সফর করা ইত্যাদি দুনিয়াবী উদ্দেশ্যের সফর হিসেবে বিবেচিত হবে। এখানেও উদ্দেশ্যের বিবেচনায় ফরজ, ওয়াজিব, মুস্তাহাব, মুবাহ, নাজায়েয ও হারাম সফর ইত্যাদি শ্রেণীভাগ ধর্তব্য। যেমন হালাল উপার্জনের কাজটি দুনিয়াবী কাজ হলেও তা ফরজ। যদি হালাল উপার্জনের উদ্দেশ্যে সফর করা আবশ্যক হয়, তাহলে ঐ সফরও ফরজ বলে গণ্য হবে। অনুরূপভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও সফরের উদ্দেশ্য বৈধ বা অবৈধ হওয়ার কারণে সফরটাও বৈধ বা অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। দুনিয়াবি বৈধ কাজের জন্য সফর করলে ও তাতে ছাওয়াবের নিয়ত করে নিলে অবশ্যই ছাওয়াব পাওয়া যাবে। যেমন কেউ ব্যবসা-বানিজ্য বা হালাল উপার্জনের জন্য সফর করল, তখন যদি এ নিয়ত করে যে, এর ফলে উপার্জিত সম্পদ দ্বারা যাদের খোর-পোষ আমার দায়িত্বে রয়েছে, তা আদায় করব, আত্মীয়তার হক আদায় করব, এতীম, অসহায়, দুঃস্থের সেবা করব বা কোন দীনী কাজে অংশ নিব ইত্যাদি, তাহলে একাজ ও একাজের উদ্দেশ্যে কৃত সফরও মহৎ ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে।


সফরে বিশেষ হুকুম

যে ব্যক্তি তিন মনজিল বা ৭৭.২৫ কিলোমিটার দূরত্বে সফরের নিয়তে বের হয়ে নিজ জনবসতি ছেড়ে যায়, শরীয়তের দৃষ্টিতে ঐ ব্যক্তি মুসাফির। চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাযসমূহ কসর করা, অর্থাৎ দুরাকাত করে আদায় করা তার জন্য ওয়াজিব ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ছাহাবায়ে কেরাম রাযি. যখন সফরে থাকতেন, তখন চার রাকাত ফরজগুলো কে দু'রাকাত করে পড়তেন।

-আবু দাউদ হা: ১২২৯, তিরমিযী হা: ৫৪৫, বাদায়ে ১/২৫৮

মাসআলা : কোন মানুষ যদি নামাযের ওয়াক্তের শুরুতে মুকীম থাকে আর নামায আদায় করা ছাড়াই সফর শুরু করে দেয়, তাহলে যেহেতু সে এখন মুসাফির, তাই চার রাকাত বিশিষ্ট নামায কসর করবে। অনুরূপ ভাবে যদি নামাযের শুরু ওয়াক্তে মুসাফির থাকে, আর নামায আদায় করার আগেই মুকীম হয়ে যায়, তাহলে সে কসর করবে না, পুরো চার রাকাতই পড়বে।

-বাদায়ে ১/২৬৪ ২৬৫

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url