আহলে হাদীস, সালাফী ও লা-মাযহাবীদের মদদে মুসলমানদের উপর ইংরেজ ও ইয়াহুদীদের জুলুম-নির্যাতন, মাযহাব কত প্রকার।


মুসলমানদের উপর ইংরেজ ও ইয়াহুদীদের জুলুম-নির্যাতন

প্রিয় পাঠক! আহলে হাদীস লা-মাযহাবী সালাফী সম্প্রদায় কেমন করে ইংরেজদের অনুগত ও খায়েরখাহী কথা বলেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ বাতিল ও রহিত বলে ঘোষণা করেছে? যে ইংরেজ ইসলাম ও মুসলমানদেরকে উৎখাত করার জন্য পৃথিবীর সর্ব রকমের নোংড়ামী, জুলুম-অত্যাচার ও বর্বরতাকে মুসলমানদের উপর এমনভাবে প্রয়োগ করেছে, যার মুকাবিলায় মানবতা লাঞ্ছিত হয়েছে আর ইংরেজ ইয়াহুদীদের বর্বরোচিত নিচের ঘটনা দ্বারা হালকা আভাস পাওয়া যায় যে, ইংরেজদের বড় রাজনীতিবিদ (ড.) ওলিম-এর পরামর্শ যে মুসলমানদের জিহাদী স্পৃহা শেষ করার পূর্বে আরো একটি কাজ করতে হবে । সেটি হলো- ভারত বর্ষে আলেমগণকে হত্যা করতে হবে এবং কুরআন মাজীদ জ্বালিয়ে দিতে হবে। সুতরাং ১৮৬১ সালে ভারত বর্ষে ৩,০০,০০০ (তিন লক্ষ) কপি কুরআন মাজীদ জ্বালিয়ে দেয়া হয়। তারপর তারা আলেমগণকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। ইংরেজ লেখক (মি.) টামশন তার গ্রন্থ 'ইয়াদ নাসত' এর মধ্যে লিখেছেন, ১৮৬৪ ইং থেকে ১৮৬৬-৬৭ ইং পর্যন্ত ইংরেজরা ভারত বর্ষে আলেমগণকে হত্যার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ তিনটি বৎসর ভারত বর্ষের জন্য বেদনাদায়ক ও ভয়াবহ ছিল। এ তিন বৎসরে ১৪ হাজার উলামাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়। (মি.) টামশন বলেছেন, দিল্লীর চাঁদনী চক থেকে দুররায়ে খায়বার পর্যন্ত এমন কোন গাছ ছিল না, যে গাছের সাথে আলেমগণের লাশ ঝুলানো হয়নি। তিনি আরো লিখেছেন, শুকরের চামড়ার ভিতরে ভরে জ্বলন্ত আগুনের ভিতর ছেড়ে দেয়া হতো। আলেমগণের শরীরে গরম পিতল দ্বারা দাগ দেয়া হতো। আলেমগণকে হাতির উপর দাঁড় করিয়ে গাছের সাথে বেঁধে হাতী নীচু থেকে সরিয়ে ফেলা হত। লাহোরের শাহী মসজিদের বারান্দাকে ইংরেজরা ফাঁসির কাষ্ঠ বানিয়েছিল। আর একেক দিন আশিজন আলেমকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হতো। লাহোরের রাবী নদীর মধ্যে প্রতি ৮০ জন উলামাকে চাটাইয়ে বেঁধে ছেড়ে দেয়া হতো এবং উপর থেকে গুলী করা হতো।


টামশন আরও বলেন, আমি আমার দিল্লীর তাবুর মধ্যে গেলাম। তখন আমার অনুভব হলো যে, লাশের গন্ধ আসছে। আমি আমার তাবুর পিছনে গিয়ে দেখলাম, সেখানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে আর সে আগুনে ৪০ জন আলেমকে উলঙ্গ অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হলো। তারপর আরও ৪০ জন উলামাকে নিয়ে আসা হলো এবং সকলকে উলঙ্গ করে বললো, হে মৌলবীগণ পূর্বের মৌলবীদের মত তোমাদেরও ঐ জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। তোমাদের মধ্যে থেকে শুধু একজন মৌলবী এতটুকু বল যে, ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা ছিলাম না। তাহলেই এই মুহূর্তেই তোমাদের ছেড়ে দিচ্ছি। টামশন বলেন, (আমরা ১৮৫৭ সালে ছিলাম না) আমার সৃষ্টিকর্তার কসম! আমি দেখলাম যে, তাদের কোন একজন আলেমও ইংরেজদের সামনে মাথানত করেন নি; বরং পূর্বের চল্লিশ জনের ন্যায় পরবর্তী চল্লিশজনও জ্বলন্ত অগ্নিস্ফুলিঙ্গে জ্বলে শাহাদাত বরণ করলেন। কিন্তু তাদের কেউই ইংরেজদের সম্মুখে মস্তকানবত হতে রাজী হলেন না।


প্রিয় পাঠকবৃন্দ। দেখার বিষয় এই যে, লা-মাযহাবী আহলে হাদীস সালাফী কেমন করে হিংস্র ইংরেজ প্রভুদের আনুগত্য ও খায়েরখাহীকে সমস্ত মুসলমানদের উপর ওয়াজিব করে দেয় এবং তাদের বিরুদ্ধে জিহাদকে হারাম বলে ঘোষণা করে । আর এই ইয়াহুদী-খৃস্টান আমেরিকা আফগানিস্তানকে তছনছ করে দিল।


তারপর ইরাক, যাতে হাজার হাজার নয়, বরং লক্ষ লক্ষ আওলিয়া, শুহাদা, আম্বিয়া এবং আকাবিরদের জন্মস্থান এবং কবরকে ধ্বংস করে দিল। লক্ষ লক্ষ নারী-শিশুকে হত্যা করলো। ঐ ইয়াহুদী আমেরিকার এজেন্ট আহলে হাদীস সালাফী লা-মাযহারী পূর্বের অভ্যাস অনুযায়ী আফগান, ইরাক-এর মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের এলজাম ও অপবাদ দিচ্ছে। যা মুত্তাকী তো দূরের কথা, সাধারণ মুসলমানও আমেরিকার এমন পক্ষপাতিত্ব করতে পারে না। কেননা আফগান-ইরাকের যুদ্ধ শুধু রাষ্ট্রীয় নয়, বরং এই যুদ্ধ ধর্মীয় এবং কাফের-মুসলিমের যুদ্ধ; তারপরেও এই ইয়াহুদী-খৃস্টান আমেরিকার এজেন্ট আহলে হাদীস সালাফী লা-মাযহাবী সম্প্রদায় আমেরিকার পক্ষ হয়ে আফগান এবং ইরাকের বিরুদ্ধে মওদুদীর ন্যায় বড় বড় ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য রাখেন।

(আহলে হাদীস সম্প্রদায়েরর মুখোশ উন্মোচন, পৃ:২৩)
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url