আহলে হাদীস ও সালাফীরা সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অবজ্ঞা করেছেন, এছাড়া অন্য নবী ও ওলীদেরও অবজ্ঞা করতে কম করেনি।


নবী ও ওলীদের অবমাননা

আহলে হাদীস ও সালাফীরা নবী এবং ওলীদের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করেছে। যেমন- নূহ আলাইহিস সালামের মেজাজ উগ্র ছিল ।

-তালীমুস সিয়াম লিস-সালাফী, পৃষ্ঠা ১১


অনুরূপভাবে তারা সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)কে অবজ্ঞা করেছেন। যেমন- “ইসলামী শরীয়তের স্বয়ং পয়গম্বর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও খোদায়ী ওহী ছাড়া কিছু বললে সেটিও দলীলরূপে গ্রহণযোগ্য নয়।"

-তরীকে মুহাম্মদী, মাওলানা মুহাম্মদ জুনাগড়ী সালাফী, পৃষ্ঠা ৩০



আরো লিখেছেনঃ “আশ্চর্য হচ্ছে যে, যেখানে নবীর মতামতও প্রামাণ্য হবে না, সেই ধর্মাবলম্বীরা আজ এক উম্মতের মতামতকে দলীল ও প্রামাণ্য মনে করতে বসেছে।

-তরীকে মুহাম্মদী, পৃষ্ঠা ৩০-৩১


নবীগণের নেতার ব্যাপারে কত জঘন্য অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং মারাত্মক অভদ্রতামূলক কথা তিনি লিখেছেন। যা রাসূলগণের বিশেষত: শেষ রাসূলের নিম্ন মানের গোলামও মেনে নিতে এবং বরদাশত করার জন্য কখনো প্রস্তুত নয়। এটা নবীগণের ব্যাপারে গোস্তাখী নয় তো আর কী, আর উম্মতের ইজমা হচ্ছে নবীর অবজ্ঞা-তিরস্কার হচ্ছে খোদাদ্রোহীতা..........।


এই সালাফী ও আহলে হাদীস বলেছেন যে, নবীর কথা প্রমাণ্য ও দলীল নয়। এদিকে সায়্যিদুর রাসূল স্বয়ং বলেছেন যে, আল্লাহ তোমাদের জন্য রমযানের রোযা ফরজ করলেন এবং قـيـامـه وسنـة لـكـم আমি তোমাদের জন্য রমযানের কিয়াম অর্থাৎ, তারাবীহের নামাযকে সুন্নাত হিসেবে সাব্যস্ত করলাম। তাহলে এখন আহলে হাদীস ও সালাফী মতাদর্শী সুধীরা একথা বলুন যে, মহানবী (সা.)-এর এই মূল্যবান বাণীটি কি ধর্ম, নাকি ধর্ম নয়। আহলে হাদীস ও সালাফীরা এটা মানবে কিনা। যদি না মানে, তাহলে বলে দিন যে, ইসলামে তারাবীহ বলতে কিছু নেই। তাহলে এখানেই আট ও বিশ রাকাতের ঝগড়াটি শেষ হয়ে যাবে। এটা হচ্ছে কেবল আহলে হাদীস ও সালাফীর বৈশিষ্ট্য, যারা বলে একটা আর করে আরেকটা। তাদের অবস্থা ও বক্তব্যের মধ্যে কোন সামঞ্জ নেই। এমনিভাবে রাসূল (সা.) ওহুদের যুদ্ধে পঞ্চাশজন সাহাবীকে এক পাহাড়ের উপর কাফের ও মুশরিকদের আক্রমণ থেকে হেফাযতের জন্য মোতায়েন করেছিলেন। নিজের সেনালভ দূরদর্শিতা দ্বারা এ পঞ্চাশজন সাহাবার মধ্যে থেকে কোন সাহাবীর জন্য কি সম্ভব ছিল যে, নবী কারীম (সা.)-এর এই হুকুমের অস্বীকার করা এই বলে যে, রাসূল এটা তো আপনার হুকুম; কিন্তু কুরআনে তো হুকুম করেনি। আর কুরআন ব্যতীত আপনার কথা আমাদের জন্য অকাট্য দলীলও নয়। এমনিভাবে খন্দকের যুদ্ধে খাল-গর্ত খনন করা হতে সালমান ফারসী (রাযি.)-এর পরামর্শ অনুযায়ী হয়েছিল। আর নবী কারীম (সা.) সালমান ফারসীর এই পরামর্শকে পছন্দ করে সাহাবীদেরকে খাল খনন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখন বলুন দেখি- কোন সাহাবীর পক্ষে সম্ভব ও জায়েয ছিল কি যে, নবীর হুকুমের বিপরীত করা। কখনো নয়। কিন্তু আহলে হাদীস ও সালাফীদের মত এটা বলে অস্বীকার করত যে, হে নবী! এটাতো সালমান ফারসী (রাযি.)-এর পরামর্শ আর আপনি দ্বীন ও ধর্মের ব্যাপারে একজন ফারাসী গোলামের কথার উপর আমল করেছেন। আমরা সালাফী ও আহলে হাদীস এ ব্যাপারে আপনার রায়ের সাথে একমত নই ।



এমনিভাবে একটি দৃষ্টান্ত নয়, হুযুর (সা.) নবী হিসেবে যখনই যে কোন কথার নির্দেশ দিয়েছেন, তাই খোদার হুকুমে হোক বা নিজ দ্বারা হোক সাহাবীরা সাথে সাথে মেনে নিয়েছিলেন এবং প্রত্যেক হুকুমকে ফরয ও ওয়াজিব মনে করে আমল করেছেন। আর সালাফী ও আহলে হাদীস-এর ন্যায় গোস্তাখী করে এটা বলে অস্বীকার করেননি। نبی کی بات دیـن مـــن حجت نـهـيـن অর্থাৎ, নবী (সা.)-এর কোন কথা দ্বীন ও ধর্মের মধ্যে হুজ্জত ও প্রামাণ নয় অথচ আল্লাহ তায়ালা কুরআন পাকের মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে-



اطيعوا الله وأطيعوا الرسول الخ الآية

অর্থাৎ, তোমরা আল্লাহ তায়ালার অনুকরণ-অনুসরণ কর, সাথে সাথে আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর অনুকরণ কর।



সালাফী ফেরকার উপরিল্লিখিত বাক্যে রাসূল (সা.) বিল এসতেকলাল মাতা' (স্বতন্ত্রভাবে অনুসরণযোগ্য) হওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট অস্বীকার বুঝায়, যা পরিষ্কার কুফর।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url