ওয়াদা ভঙ্গ ও চুক্তি লঙ্ঘন
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত আছে- রাসূল (সাঃ) ফরমায়েছেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি-
১। যখন কথা বলবে মিথ্যা বলবে
২। ওয়াদা করলে তা খেলাপ করবে ও
৩। তার নিকট কোন কিছু আমানত রাখলে তার খেয়ানত করবে। (মেশকাত-কাবায়ের অধ্যয়)
বুখারী ও মুসলিমের অপর এক হাদীসে আছে- আল্লাহর নবী (সাঃ) ফরমায়েছেন- যার মধ্যে চারটি অভ্যাস আছে সে নিশ্চিত মুনাফিক। যার মধ্যে তার একটি আছে তা ত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি খাছলত বিদ্যমান থাকবে।
১। তার নিকট আমানত রাখলে খেয়ানত করে
২। কথা বললে মিথ্যা বলে
৩। ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে
৪ । কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ করলে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়।
ফায়েদাঃ শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রঃ) লিখেছেন যে, মুনাফিকের দু' অর্থ। এক : আন্তরিকভাবে সে কাফের কিন্তু প্রকাশ্যে সে মুসলমান। কুরআন মজীদে মুনাফিকের ব্যাপারে যে ঘোষণা এসেছে
ان المنافقين في الدرك الأسفل من النار
অর্থাৎ- মুনাফিকদের স্থান হলো জাহান্নামের সর্ব নিকৃষ্টতম স্থান।
এর দ্বারা এ জাতীয় মুনাফিক উদ্দেশ্য। দুইঃ যাদের ঈমান দূর্বল। এ কারণেই তাদের থেকে মুনাফিকদের ন্যায় আমল ও কাজকর্ম প্রকাশিত হয়। গোনাহর থেকে বাঁচার জন্যে যে পরিমাণ ঈমান থাকা দরকার সে পর্যায়ের ঈমানের অধিকারী তারা নয়। আলোচ্য হাদীসে এ শ্রেণীর মুনাফিক উদ্দেশ্য।
ইমাম বায়হাকী (রঃ) বর্ণনা করেন- মহানবী (সাঃ) ফরমায়েছেন “যার ওয়াদা ঠিক নেই তার দ্বীন ঠিক নেই। অর্থাৎ যে ব্যক্তি স্বীয় প্রতিশ্রুতি বজায় রাখেনা তার ঈমান থাকে না। (মেশকাত-ঈমান অধ্যায়)
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসূলে করীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন ওয়াদা ভঙ্গকারীর পিছনে একটি ঝান্ডা থাকবে। সে যে পর্যায়ের ওয়াদা ভঙ্গকারী হবে ঝান্ডাটিও সে পর্যায়ের লম্বা হবে। সর্বাপেক্ষা বড় ওয়াদা ভঙ্গ সাব্যস্ত হবে রাজা বাদশাগণের (কৃত ওয়াদা ভঙ্গ)। সুতরাং তাদের ঝান্ডাও পরিচিতির জন্যে সর্বাপেক্ষা উঁচু হবে।
মাসআলা : ওয়াদা করার সময় যদি তা পালনের পূর্ণ নিয়ত থাকে কিন্তু পরে কোন ওযর ও কারণবশতঃ তা পালন করতে ব্যর্থ হয়। তাহলে সে গোনাহগার হবে না। এ বিষয়ে আবু দাউদ ও তিরমিযী শরীফে একটি হাদীস বর্ণিত আছে। আর যদি ওয়াদা করার সময় অন্তরে তা পালন না করার নিয়ত থাকে তাহলে তা হবে মুনাফিকের আলামত ও গোনাহে কবীরা।
মাসআলা : অন্যায় কাজের জন্যে ওয়াদা করলে যেমন নৃত্যানুষ্ঠানে যাওয়া বা সূদে টাকা দেয়া প্রভৃতি তাহলে তা পালন করা নাজায়েয ।