একজন নারী যেমন স্বামী পছন্দ করে ও পুরুষের যেসব গুণাবলী নারীদের পছন্দ।


একজন নারী

যেমন স্বামী পছন্দ করে।

১. নারীরা কঠোর-কর্কশ-বদমেজাজী-রুক্ষস্বভাবের পুরুষকে একদম পছন্দ করে না। আপনার মধ্যে এমন কিছু থেকে থাকলে এখনই ঝেড়ে ফেলুন। কারণ তারা সুশীল, ভদ্র, উদার পুরুষ পছন্দ করে, আপনি তার ভালোবাসা অর্জনের জন্যে, তাকে আশ্বস্ত করার জন্যে হলেও গুণগুলো অর্জন করুন।


২. নারীদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে এমনভাবে যে, তারা স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়। তার প্রতি অতীতে কৃত সব সদ্ব্যবহার-সদাচার ভুলে যায়। আপনি যদি তার প্রতি যুগ-যুগান্তরও সুন্দর আচরণ করেন, হঠাৎ একদিন কোনক্রমে একটু রূঢ় আচরণ করে ফেলেন, ব্যস অমনিই সে নাকের জল চোখের জল এক করে বলবে: 'আমি তোমার কাছ থেকে কখনোই ভালো কিছু পাইনি।'

তার এই আচরণে রুষ্ট হবেন না। তার এই চপল স্বভাবের প্রতিক্রিয়ায় তার প্রতি বিতৃষ্ণা আনবেন না। তার এই স্বভাবকে আপনি অপছন্দ করলেও, তার মধ্যে আপনি অনেক এমন কিছু পাবেন যা আপনি শুধু পছন্দই করেন না, বরং জানও দিয়ে দিতে পারেন।


৩. নারীরা সাধারণত রোমান্টিকতা পছন্দ করে। খুনসুটি রসিকতা পছন্দ করে। নখরা-ন্যাকা তাদের স্বভাবজাত। তারা ভালোবাসার স্পষ্ট প্রকাশকে খুবই পছন্দ করে। তাই একান্তে স্ত্রীর কাছে এসব প্রকাশে কখনোই কার্পণ্য করবেন না। তাকে বেশি বেশি ভালোবাসার কথা বলবেন।


৪. যদি এসবে কার্পণ্য করেন, তাহলে দেখবেন কিছুদিন পরই আপনার আর তার মাঝে একটা অদৃশ্য পর্দা ঝুলে গেছে। এরপর দিনদিন পরস্পরের সম্পর্কে শুষ্কতা আসতে শুরু করবে। ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালাবার পথ খুঁজবে।


৫. সবসময় মনে রাখবেন, আপনার স্ত্রী আপনার কাছে অনেকটা দায়বদ্ধ, বিভিন্নভাবে আপনার মুখাপেক্ষী। আপনার সুন্দর আচরণের কাঙাল। আপনি তার প্রতি যত্নবান হন। তার প্রতি অনেক বেশি মনোযোগ দিন। তাকে আপন করে নিন। তাহলে সে আপনার জন্যে শ্রেষ্ঠ সম্পদে পরিণত হবে। তাকে অনুপম সঙ্গী হিশেবে পাবেন।


৬. এটা খুব ভাল করে মনে রাখবেন, আপনি আপনার স্ত্রীকে যেমন পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, পরিপাটি, গোছালো, সুরুচিপূর্ণ, সুগন্ধিময় দেখতে চান, আপনার স্ত্রীও কিন্তু আপনাকে ঠিক তেমনটাই চায়। তাই সাবধান থাকবেন, তার চাহিদা পূরণে যেন, কোন অবস্থাতেই, আপনার পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র অবহেলা না হয়।


৭. আপনি জানেন, অনেক শুনেছেন এবং পড়েছেন নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে বাহু (বা পাঁজরের) বাঁকা হাড় থেকে। এই বক্রতা কিন্তু তার দোষ নয়, সৌন্দর্য। আপনি চোখের ভ্রু লক্ষ করে দেখেছেন? সেটার সৌন্দর্যটা কোথায়? বক্রতায়, বক্রতাই ভ্রুকে সুন্দর করে তোলে। ভ্রুটা যদি সোজা হতো, দেখতে সুন্দর লাগতো না। যদি আপনার স্ত্রী কোনও ভুল করে ফেলে, অস্থির হয়ে রেগেমেগে হামলা করে বসবেন না। উত্তেজিত অবস্থায় তাকে সোজা করতে যাবেন না, তাহলে অতিরিক্ত চাপে ভেঙে যাবে। আর ভেঙে যাওয়া মানেই তো, তালাক ।


৮. ঘর হলো নারীদের রাজ্য। একজন নারী নিজেকে সব সময় সেই রাজ্যের সিংহাসনে আসীন দেখতে খুবই পছন্দ করে। সে কল্পনায়, স্বপ্নে, বাস্তবে সেই রাজ্য নিয়ে ভাবে। সাজায়। রচনা করে। খুবই সাবধান থাকবেন! কখনোই আপনার স্ত্রীর এই সুখময় রাজত্বকে ভেঙে দিতে যাবেন না। এমনকি তাকে সিংহাসন থেকে নামিয়ে দেয়ার প্রয়াসও চালাবেনন না।


৯. নারীরা তার স্বামীকে মনেপ্রাণে-সর্বান্তঃকরণে প্রবলভাবে স্বামীকে পেতে চায়। তবে পাশাপাশি বাপের বাড়িকেও হারাতে চায় না। হুঁশিয়ার থাকবেন! আপনি ভুলেও নিজেকে আর স্ত্রীর পরিবারকে এক পাল্লায় তুলে মাপতে যাবেন না। আপনি এ অন্যায় দাবী করে বসবেন না, হয় আমাকে বেছে নাও, নাহলে তোমার বাবা-মাকে।

আপনি এ বিষয়টা চিন্তাতেও স্থান দিবেন না। আপনি তাকে এমনটা করতে বাধ্য করলে, সে হয়তো চাপে পড়ে মেনে নিবে। কিন্তু তার মনের গহীনে কোথাও একটা চাপা-বোবা কান্না গুমরে মরতে থাকবে। আপনার প্রতি এক ধরনের সুপ্ত অশ্রদ্ধা তার কোমল মনে জেগে উঠবে।


১০. নারীদের শরীর-মনের অবস্থা সবসময় এক রকম থাকে না। এক সময় এক রকম থাকে। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট একটা সময় তাদের শারীরিক দুর্বলতা থাকে। অনেক সময় মানসিক অস্থিরতাও বিরাজ করে। তাদের এই দুর্বলতা, অসহায় অবস্থার কথা বিবেচনা করে আল্লাহ তা'আলা তাদের নির্দিষ্ট সময়ের নামায মাফ করে দিয়েছেন। রোযাকে পিছিয়ে দিয়েছেন, তার স্বাস্থ্য ও মেজাজ ঠিক হওয়া পর্যন্ত ।

আপনি তো সেই আল্লাহর বান্দা। আপনিও আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হন। আপনি আপনার স্ত্রীর দুর্বল মুহূর্তগুলোতে তার প্রতি কোমল হন। আপনার রবও খুশি হবেন, আপনার স্ত্রীও খুশি হবে ও কৃতজ্ঞ হবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url