এক নজরে আল-কুরআন।


কোরআনকে আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, সুতরাং উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?

-সূরা ক্বামার ১৭


এরুপভাবে আমি অবতীর্ণ করেছি কুরআন আরবী ভাষায় এবং তাতে বিশদভাবে বিবৃত করেছি সতর্কবাণী যাতে তারা ভয় করে অথবা এটা হয় তাদের জন্য উপদেশ।

-সূরা তোয়াহা- ১১৩


কোরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব কিয়ামত পর্যন্ত এই মহাগ্রন্থ অবিকৃত অবস্থায় আল্লাহ পাক স্বয়ং হিফাযত করবেন। আল্লাহ বলেন -নিশ্চয় আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমি অবশ্যই তা সংরক্ষণ করব।

-সুরা হিজর, আয়াত: ০৯


এই মহাগ্রন্থ আল কোরআন ঘরে সাজিয়ে রাখার জন্য নয় বরং তা তিলাওয়াত করে সাওয়াব হাসিলের জন্য এবং কোরআনের বিধি-বিধান সমূহ ব্যক্তিগত, সামাজিক, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রয়োগ ও প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহ পাক আমাদের। জীবন বিধান হিসাবে নাযিল করেছেন।


বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে কোরআনে কারীম সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরা হল।

📝 রমাজান মাসের কদরের রজনীতে হেরা পর্বতের গুহায় সর্বপ্রথম কুরআন অবতীর্ণ হয়।

📝 অবতরণের পূর্ণ সময়কাল: ২২ বছর পাঁচ মাস ১৪ দিন।

📝 প্রথম নাজিলকৃত পূর্ণ সূরা হলো সূরা ফাতেহা।

📝 সর্বপ্রথম নাজিলকৃত কুরআনের আয়াত হলো সুরা আ'লাকের প্রথম পাঁচ আয়াত।

📝 কুরআনের প্রথম শব্দ হলো “ইকরা”-তুমি পড়ো।

📝 কুরআনের সর্বশেষ নাজিলকৃত সুরা হলো “আন-নাসর" এবং সর্বশেষ নাজিলকৃত আয়াত হলো সুরা বাকারার ২৮১ নম্বর আয়াত। (তবে এসব বিষয়ে মুফাসসির ও মুহাদ্দিসদের একাধিক মত রয়েছে। সংক্ষিপ্ততার কারনে সেগুলো উল্লেখ করা হল না)

📝 কুরআনের নাজিল শেষ হয়- হিজরী ১১ সালের সফর মাস।

📝 কুরআনের সর্ববৃহৎ সূরা হলো সূরা বাকারা। এর আয়াত সংখ্যা হলো ২৮৬।

📝 কুরআনের সবচেয়ে ছোট সূরা-সূরা কাউসার। এর আয়াত সংখ্যা হলো ৩টি।

📝 পবিত্র কুরআনে মোট ১১৪টি সূরা রয়েছে। এর মধ্যে মক্কি সুরা (হিজরতের আগে নাজিলকৃত) ৯২টি, মাদানি সূরা (হিজরতের পরে নাজিলকৃত) ২২টি।

📝 কুরআনে মোট ৫৪০টি রুকু রয়েছে।

📝 কুরআনের আয়াত সংখ্যা ৬২৩৬টি। তবে এ ব্যাপারে একাধিক মত রয়েছে।

📝 কুরআনের মোট শব্দ ৭৭৪৩৭/৭৭৪৩৯টি।

📝 কুরআনের মোট মনজিল সাতটি এবং পারা ৩০টি।

📝 সর্বপ্রথম কুরআনে নুকতা ও হরকত প্রবর্তন করেন আবুল আসওয়াদ দুয়াইলি। মতান্তরে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ।

📝 হানাফি মাজহাব মতে কুরআনে তিলাওয়াতে সিজদা ১৪টি এবং সাকতার সংখ্যা ৪টি।

📝 কুরআনে নবী ও রাসূলের নাম এসেছে ২৫ জনের। হযরত আদম, ইব্রাহীম, ইসহাক, ইসমাঈল, ইয়াকুব, ইউসুফ, নূহ, দাউদ, আল-ইয়াসা', ইউনুস, লূত, সুলাইমান, ইলইয়াস, মুসা, হারুন, যাকারিয়্যা ইয়াহইয়া, আইয়্যুব, হুদ, সালিহ শুয়াইব, ইদরীস, যুল-কিফল, ঈসা, মোহাম্মাদ (আলাইহিমুস সালাতু ওয়াস সালাম)

📝 আমাদের নবীর "মোহাম্মদ" নাম এসেছে- ৪ বার, “আহমাদ” ১ বার।

📝 ফেরেশতার নাম এসেছে ৬ জনের জিব্রাঈল, মীকাঈল, মালিক (দোযখের প্রহরী) মালাকুল মাউত (আযরাঈল) হারুত, মারুত।

📝 শয়তান শব্দটি এসেছে ৮৮ বার, ইবলিস শব্দ এসেছে ১১ বার।

📝 জিন জাতির প্রসঙ্গ এসেছে ৩২ বার।

📝 নবীদের মধ্যে পবিত্র কুরআনে সবচেয়ে বেশী মূসা আ. এর নাম এসেছে। তাঁর নাম এসেছে ১৩১ বার।

📝 কুরআনে সাতজন কাফেরের নাম রয়েছে। ফিরআউন, আযার, জালুত, কারুন, হামান, সামেরী, আবু লাহাব।

📝 কুরআনে বিসমিল্লাহ নেই সুরা তাওবায়

📝 কুরআনে বিসমিল্লাহ দুই বার এসেছে সুরা নামলে।

📝 কুরআনে বর্ণিত একজন সাহাবি হযরত যায়েদ বিন হারিছা রা.।

📝 কুরআনে বর্ণিত একমাত্র নারীর নাম - মারইয়াম বিনতে ইমরান।

📝 প্রথম ওয়াহী লেখক - যায়েদ বিন সাবেত রা.।

📝 কুরআনকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা. ৬৩৩ খ্রীষ্টাব্দে।

📝 গ্রন্থাকারে কুরআনের প্রথম সংকলক হযরত উসমান রা.। হযরত উসমান রা. কে " জামিউল কুরআন" বলা হয়।

📝 কুরআনের প্রধান তাফসিরবিদ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.।

কাতিবে ওয়াহী অর্থাৎ ওয়াহী লিখক সাহাবীদের নাম-

কতজন সাহাবি নিয়মিত ওয়াহী লিপিবদ্ধ করতেন তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মতভিন্নতা রয়েছে। কেউ বলেছেন ১০ জন। কারো দাবি তাদের সংখ্যা ২০ এর বেশি ছিল। আল্লামা ইবনে কাসির বহু “আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া” গ্রন্থে তাঁদের সংখ্যা ২৩ জান লিখেছেন। তিনি তাদের নাম ও জীবনী লিপিবদ্ধ করেছেন। তাঁরা হলেন-

আবু বকর, আলী ইবনু আবী তালিব, আবান বিন সাঈদ, উবাই বিন কা'ব, যায়েদ বিন সাবেত, মুজা' বিন জাবাল, আরকাম বিন আবিল আরকাম, সাবিত বিন কারেল, হানজালা বিন রাবি, খালেদ বিন সাঈদ, খালিদ বিন ওয়ালিদ, যুবাইর ইবনুল আওয়াম আব্দুল্লাহ বিন আবি সারাহ, আমের বিন ফুহাইরা, আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ, আলা বিন আব্দুল্লাহ হাদরামি, মুহাম্মদ বিন মুয়াবিয়া বিন আবি সুফিয়ান, মুগিরা বিন শো'বা রাদিয়াল্লাহু আনহু আজমায়ীন 

-ইবনে কাসির

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url