স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য কি?

আপনি একজন ভিন্ মহিলাকে বিবাহবন্ধনের মাধ্যমে আপন করে তার মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজন থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে নিজের ঘরে তুলে এনেছেন। তাই তার সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করা এবং তার প্রতি হৃদয়ের একান্ত ভালবাসা প্রদর্শন করে তার স্বাত্মীয়-স্বজনের আদর-সোহাগ পূরণ করা আপনার দায়িত্ব। এক্ষেত্রে স্বামী হিসেবে আপনার যিম্মায় অনেক কর্তব্য এসে দাঁড়ায়। যার কিয়দাংশ নিম্নরূপ-

০১। আল্লাহ তা'আলা আপনাকে একজন স্ত্রী দান করেছেন, সে জন্য তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকুন, তার শোকর আদায় করুন।

০২। স্ত্রীকে বুঝবার চেষ্টা করুন। তার জ্ঞান, বুদ্ধি, মানসিকতা, স্বভাব প্রকৃতি প্রভৃতি জেনে সেভাবে তার সাথে আচরণ করুন।

০৩। তাকে আল্লাহর বান্দীরূপে এবং আপনার মনের মতো স্ত্রীরূপে গড়ে তুলবার পরিকল্পনা নিন।

০৪। তার জ্ঞান, বুদ্ধি, যোগ্যতা, প্রতিভা ও গুণাবলীকে বিকশিত করে তুলুন। তাকে সম্ভাব্য সর্বগুণে ফুলের মতো প্রস্ফুটিত করে তুলুন।

০৫। তার মধ্যে যেসব ত্রুটি ও দুর্বলতা আছে, একজন সুচিকিৎসকের মতো ধৈর্য নিয়ে সেগুলো নিরাময়ের চেষ্টা করুন। আর এর সংশোধনের জন্য আল্লাহর নিকট দু'আ করুন।

০৬। তাকে অন্তর সাথে গভীরভাবে ভালোবাসুন এবং একান্তভাবে আপন করে নিন।

০৭। তার সাথে সর্বদা হাসি-খুশীর সাথে কথা বলুন।

০৮। মাঝে মাঝে তাকে নিয়ে জায়িয গণ্ডির ভিতরে কোথাও বেড়াতে যান।

০৯। তার কাজকে উত্তমভাবে মূল্যায়ন করুন, তার ভালো গুণাবলীর প্রশংসা করুন।

১০। তার কাছে ভরসাপূর্ণ, বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিত্ববান হোন।

১১। তার সাথে পরামর্শ করে কাজ করুন।

১২। তার চিন্তা-চেতনার গুরুত্ব দিন।

১৩। তার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করুন এবং জৈবিক চাহিদা পূরণ করুন।

১৪। কথা, কাজ এবং আচার-ব্যবহারে তার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করুন।

১৫। তার ছোট-খাটো ত্রুটি-বিচ্যুতি উপেক্ষা করুন।

১৬। তার ভালো দিকগুলো বিবেচনা করে মন্দ দিকগুলো ভুলে থাকুন।

১৭। নিজেকে তার কাছে কলুষমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখুন, কোন ব্যাপারে লুকোচুরি করবেন না।

১৮। তার সঙ্গত আবদার রক্ষা করুন।

১৯। আপনার জন্য কোনরূপ কষ্ট ও মেহনত করলে তাকে ধন্যবাদ জানান।

২০। আপনার কোনরূপ উপকার করলে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।

২১। অযথা তাকে অবিশ্বাস করবেন না, তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখুন।

২২। মাঝে-মধ্যে তাকে উপহার দিন।

২৩। সাধ্যানুযায়ী তার খোরপোষ ও আবাসনের উত্তম ব্যবস্থা করুন।

২৪। তার মন বুঝুন। বৈধ বিষয়ে তার মন রক্ষা করে চলুন।

২৫। নিজের সমস্যা ও সংকট নিয়ে প্রয়োজনমতো তার সাথে আলোচনা করুন। আপনার কর্ম ও ব্যস্ততা সম্পর্কে তাকে অবহিত করুন।

২৬। তাকে সবসময় হাত খরচের জন্য কিছু টাকা-পয়সা দিন।

২৭। তার মনের মতো করে ঘর-সংসারের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাকে দিন।

২৮। তার উপার্জিত অর্থ তাকেই স্বাধীনভাবে খরচ করতে দিন। এতে আপনি হস্তক্ষেপ করবেন না বা ভাগ বসাবেন না।

২৯। তার অভিযোগ ও অসুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখুন এবং তা দ্রুত দূর করার চেষ্টা করুন। তাকে বুঝতে দিন, আপনি সত্যিই তার ভালো চান।

৩০। তার যেকোন ভালো পদক্ষেপ ও উত্তম প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।

৩১। তার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখুন। অসুস্থ হলে দ্রুত তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।

৩২। তার কাছে ভুল করলে তা স্বীকার করুন। অন্যায় করলে অনুতপ্ত হোন।

৩৩। তাকে একান্ত ফ্রেন্ড বানিয়ে নিন। তার সাথে বন্ধুর মতো হৃদ্যতা পড়ে তুলুন এবং বন্ধুর মতো আচরণ করুন।

৩৪। ঘরের যাবতীয় ইন্তিজামের ব্যাপারে তার মতামতকে অগ্রাধিকার দিন।

৩৫। কখনো অন্যের কাছে তার বদনাম করবেন না।

৩৬। তার আত্মীয়-স্বজনদেরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করুন।

৩৭। ঘরোয়া কাজে তাকে সাধ্যমত সাহায্য করুন।

৩৮। সন্তান-স্বজন বা কারো সামনে তাকে অপমানিত করবেন না।

৩৯। তার মন জয়ের চেষ্টা করুন।

৪০। তাকে জিজ্ঞাসা করুন, তিনি আপনাকে কেমন দেখতে চান এবং তার কাছে আরো প্রিয় হবার জন্য আপনার কী কী করা দরকার।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url