কওমী মাদ্রাসা কি ও কেন? মাদ্রাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য, গুরুত্ব ও তাৎপর্য।

কোরআন সুন্নাহ হলো ইসলামের মূল ভিত্তি। তাই কোরআনের শিক্ষা ছাড়া ইসলামী জীবন গঠন করা সম্ভব নয়। যদি শিক্ষা জাতীর মেরুদন্ড প্রবাদটি সত্য হয়, তাহলে একথা বলতে কোন দিধা নেই যে, ইসলামী শিক্ষাই মুসলিম জাতির মেরুদন্ড।

ইসলাম ধর্মই মনুষকে সঠিক অর্থে মানবতা ও শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। কেননা শিক্ষাহীন জাতি পশুর সমতুল্য। তাই কোরআনের ভাষায় দ্যার্থহীন কণ্ঠে ঘোষিত হয়েছে,


قل هل يستوى الذين يعلمون والذين لا يعلمون
অর্থাৎ হে রাসূল! আপনি আপনার উম্মতদেরকে বলুন যারা শিক্ষিত আর যারা শিক্ষিত নয় তারা কি সমান হতে পারে?

-সুরা আজজুমার ০৯


এমনিভাবে রাসূল (সা.) এর উপর সর্বপ্রথম জিব্রাইল (আ.) যে, ঐশী বাণী নিয়ে এসেছিলেন তার মূল কথা ছিলো “হে রাসূল আপনি আপনার প্রভুর নামে পড়তে থাকুন।"

-সুরা আলাক ০১


এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অসংখ্য হাদিসে পড়া-লেখার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। এবং এ শিক্ষার মিশন বাস্তবায়ন করার জন্য স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেই মসজিদে নববীতে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নিজেই ছিলেন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এরই ধারাবাহিকতায় কোরআনের শিক্ষা সংরক্ষন ও ইসলামী তাহজীব-তামাদ্দুন বিশ্বের মানুষের সামনে সমুন্নত রাখার জন্য অসংখ্য বীনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা লাভ করা হয়েছে। যেসকল প্রতিষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিলো মানুষকে অরাজকতা, অসভ্যতা ও অপসংস্কৃতির উত্তাল তরঙ্গ থেকে মুক্ত করে সভ্যতা ও সুস্থ সংস্কৃতির দিকে পথ দেখানো। আর এ শিক্ষাকে সামনে রেখেই উপমহাদেশের মজলুম জনতা ইংরেজদের নিষ্পেষনের বিরুদ্ধে নতুন এক আন্দোলনের সুচনা করেছিল। যেই আন্দোলনের পথ ধরেই অবশেষে উপমহাদেশের মানুষ শত শত বছরের বন্দীদশা থেকে মুক্তি লাভ করেছিল। এক কথায় মানবতার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখতে হলে ও ইনসাফের ভিত্তিতে সভ্য সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই। যদি পৃথিবী থেকে ইসলামের আলোকে নিশ্চিহ্ন করতে হয় তাহলে মাদ্রাসা শিক্ষাকে বন্ধ করতে পারলেই এ ম্যান্ডেড বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। তাইতো প্রাচ্যের কবি আল্লামা ডঃ ইকবাল বলেছেন “এ সকল মাদ্রাসাগুলোকে আপন অবস্থায় থাকতে দাও, গরীব অসহায় মুসলমানের ছেলেমেয়েদের এ মাদ্রাসা গুলোতেই পড়তে দাও। যদি এ সকল উলামা দরবেশের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়, তাহলে জান কি হবে? যা হবে আমি তা স্বঃচোখে দেখে এসেছি।

যদি হিন্দুস্তানের মুসলমান এ মাদ্রাসা শিক্ষা হতে বঞ্চিত হয়ে যায়, তাহলে যেভাবে স্পেনে মুসলমানদের ৮০০শত বছরের রাজত্ব থাকা সত্যেও কর্ডোবা ও গ্রানাডার প্রাচীন নিদর্শন ও লাল গুম্বুজ ছাড়া ইসলামী তাহজীব-তামাদ্দুনের কোন নিদর্শনই পওয়া যায় না। তেমনিভাবে হিন্দুস্থানে ও আগ্রার তাজমহল ও দিল্লির লাল কেল্লা ছাড়া ইসলামের কোন নমুনাই অবশিষ্ট থাকবে না।

-মাদারেছ, পৃঃ ৩৭, খুন বাহা, পৃঃ ৯১৪২


বিজ্ঞ কবির কথা থেকে একথাই প্রতীয়মান হয় যে, দ্বীনি মাদ্রাসা গুলোই বাস্তবিক পক্ষে ইসলাম সংরক্ষনের মূল মারকাজ কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, বিশ্বের পরাশক্তি গুলো একযোগে ইসলামের নাম-নিশানা চিরতরে মিটিয়ে ফেলার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের এ হীন ষড়যন্ত্রের একটাই উদ্দেশ্য তা হলো বিশ্বব্যাপি ইসলামী শক্তিকে দুর্বল করা । তাই মুসলিম উম্মার অস্তিত্ব রক্ষার এ লড়াইয়ে বিজয় অর্জন করতে হলে ইসলামী শিক্ষার বিস্তারে এক যোগে কাজ করতে হবে আমার সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধে মাদ্রাসা শিক্ষা ও তার গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।


মাদ্রাসার পরিচয়

বিশ্ব নন্দিত ইসলামী চিন্তাবিদ আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী (রহ.) এর ভাষায় মাদ্রাসা শুধু পঠন পাঠন কিংবা শিক্ষিত কিছু মানুষ উৎপাদনের কারখানা নয়, বরং আমার চিন্তা ও বিশ্বাস এই যে, মাদ্রাসা হলো খিলাফতে ইলাহীয়ার মহান দায়িত্ব পালনকারী, মানব জাতিকে হেদায়েতের পয়গাম দানকারী এবং মানবতাকে মুক্তির পথ প্রদর্শনকারী একদল নায়েবে রাসূল তৈরীর কেন্দ্র। মাদ্রাসা হলো আদর্শ মানব তৈরীর গ্রহণযোগ্য কারখানা। (মাসিক আল হক নভেম্বর, ০৬)


মাদ্রাসার উৎস

দুনিয়ার সর্ব প্রথম মাদ্রাসার বুনিয়াদ কর্ডোবা ও গ্রানাডায় রাখা হয়নি। দিল্লি কিংবা লখনৌতে ও নয়। দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামা কিংবা দারুল উলুম দেওবন্দেও রাখা হয়নি। বরং সর্ব প্রথম মাদ্রাসার ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছিল মসজিদে নববীতে, এবং তার নাম রাখা হয়েছিল "ছুফফা” তাই ঐ বিদ্যালয় কিংবা মাদ্রাসাই হলো বিশুদ্ধ ও বৈধ বংশ পরিচয়ের অধিকারী যার শাযারা ও বংশ লতিকা চুফফায়ে নববীতে গিয়ে শেষ হয়েছে।


মাদ্রাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য

অনায়াসেই আমরা বলতে পারি যে, মাদ্রাসার উদ্দেশ্য জীবন জীবিকার ক্ষেত্র সৃষ্টি করা নয় এবং এমন কিছু শিক্ষিত মানুষ ও তৈরী করা নয় যারা কলম বা বাকশক্তির যাদুতে মানুষকে মোহমুগ্ধ করতে পারে। মাদ্রাসার দায়িত্ব ও উদ্দেশ্য হলো মানবতাকে কোরআনের বানী শুনানো, মানুষের মাঝে কোরআনের দীপ্তিময় আলো ছড়ানো, এবং সকল প্রতিকূলতার মাঝেও বিভ্রান্ত মানব কাফেলা কে মুক্তির পথ দেখানো। দুনিয়াতে যখনই সকল সত্য ও বাস্তবতাকে অস্বীকার করা হয়। শক্তি ও ক্ষমতাকেই একমাত্র সত্য মনে করা হয় যখন জোর গলায় প্রচার করা হয় যে, পৃথিবীতে নীতি ও নৈতিকতার মৃত্যু ঘটেছে, শারাফাত ও ইনসানিয়াতের মৃত্যু ঘটেছে। ঠিক তখনই মাদ্রাসা উঠে দাড়ায় এবং দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করে না শারাফাত ও ইনসানিয়াতের এখনো মৃত্যু হয়নি, বিবেক আত্মমর্যাদা এখনো বেচে আছে, আল্লাহর শক্তিই হলো বড় শক্তি এবং হকের আওয়াজই শ্রেষ্ঠ আওয়াজ। মানবতার অধঃপতন যখন শুরু হয়, মানুষের মাঝে নীতি নৈতিকতায় যখন ধ্বস নামে, মানুষ যখনই ভাবে অর্থ-বিত্ত ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি এবং পদ ও প্রতিষ্ঠা লাভই আসল, তখনই মাদ্রাসা সময়ের শ্রোতধারা এবং সমাজের অবান্তর চিন্তাধারার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। মাদ্রাসা তখন এমন একদল মানুষ তৈরী করে যারা পাহাড়ের উচ্চতাকেও ছাড়িয়ে যায়। পর্বতের অবিচলতাকে হাড় মানায়। ১৮৫৭ সালের সি পাহী বিপ্লবের পর ইংরেজরা যখন বিদ্রোহী বিপ্লবীদের উপর নির্মম নির্যাতন শুরু করে তখন তারা প্রথম টার্গেট হিসেবে চিহ্নিত করে অত্যাচারের স্ত্রীম রোলার চালায় আলেম সমাজের উপর। তাদের কাউকে ফাঁসী কাষ্ঠে ঝুলানো হলো কাউকে নির্বাসন দেওয়া হলো মাল্টা অথবা আন্দামানে। কাউকে শহীদ করা হলো গাছে ঝুলিয়ে। কিন্তু এতকিছুর পরও ইসলামের বীর কেশরী সৈনিক এই আলেম সমাজ মূহুর্তের জন্যও মনোবল হারায়নি। বরং তারা সূচিন্তিতভাবে সূচনা করলেন আন্দোলনের এক নতুন ধারা। কেননা উপমহাদেশের আলেম সমাজ বুঝতে পারলেন যে, এদেশে ইসলামের ঝান্ডাকে চির বুলন্দ রাখতে হলে, আহুত প্রজন্মের ঈমান আক্বীদা সুরক্ষা করতে হলে শুরু করতে হবে নতুন এক স্নায়ুযুদ্ধ, যার মাধ্যমে জন্ম নিবে একদল দ্বীনের দায়ী মুবাল্লিগ ইসলামের নিবেদিত প্রাণ সৈনিক। যারা যে, কোন সংকটময় মূহুর্তে পালন করবে জিন্দাদিল অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা। ঐক্যের সীসাঢালা প্রাচীর পড়ে যারা প্রাণান্তকর চেষ্টায় সংরক্ষন করবে ইসলামের প্রত্যেকটি নিদর্শন, রাসূল (সা.)-এর একেকটি আদর্শ। আর এই মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই ১৮৬৬ ইং (১২৮৩ হিঃ) সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে উপমহাদেশের প্রথম কওমী মাদ্রাসা, দারুল উলুম দেওবন্দ।


মাদ্রাসা শিক্ষার গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ইসলাম মানবজাতির জন্য একমাত্র সর্বকালীন ও সার্বজনীন জীবন বিধান তা সু-প্রতিষ্ঠিত সত্য, মানবকূলের এমন কোন প্রয়োজন নেই যার সমাধান ইসলাম করেনি। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বাসগৃহের কোণ থেকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের জানা অজানা সকল বিষয় এমনকি ব্যক্তি জীবনের অতি তুচ্ছ বিষয় থেকে নিয়ে সমাজ জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পর্যন্ত এমন কোন কিছু নেই যার সুষ্ঠু শিক্ষা ইসলাম দেয়নি। এমনিভাবে পরকালীন কোন মত পথ বা কর্মকান্ড নেই যা ইসলাম সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেনি। কিন্তু এ দীপ্তিময় সত্য অনুধাবন করতে হলে ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই।

মহান আল্লাহ তায়ালা তার চিরন্তন ও সুরক্ষিত মহাগ্রন্থ আল কোরআনে যে শব্দটি দিয়ে মানবকুলকে সর্ব প্রথম সম্বোধন করেছেন তা হলো “ইকরা” অর্থাৎ পড়তে থাকো। ইহা দ্বারা স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, ইসলামই শিক্ষা দীক্ষার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছে। তবে এ শিক্ষা পাশ্চাত্যের বল্গাহীন বাধাহীন শিক্ষা হতে পারবেনা। বরং এ শিক্ষা হতে হবে আল্লাহ তায়ালার বিধান সম্মত। তাই পরবর্তীতে ঘোষণা হয়েছে (باسم ربك الذي خلق) অর্থাৎ এ পড়া হতে হবে তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং আল্লাহ তায়ালার অশেষ নিয়ামত ইসলামকে সঠিকভাবে অনুধাবন করতে হলে এবং মানব জাতির জীবন বিধানকে পরিপূর্ণভাবে বুঝতে হলেও বিধান স্বরূপ সমাজ ও ব্যক্তি জীবনে তার সফল বাস্তবায়ন চাইলে আল্লাহর বিধান সম্মত শিক্ষা তথা ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নেই। ইসলামী শিক্ষার অর্থ এই নয় যে, জাগতিক চিন্তা চেতনাকে পরিহার করে কর্মবিমুখ তথাকথিত আধ্যাত্মিক শিক্ষা বরং ইসলামী শিক্ষার অর্থ জাগতিক ও আধ্যাত্বিক শিক্ষার। সমন্বিত রূপ আত্মিক উৎকর্ষ সাধন ও জাগতিক প্রয়োজন মিটানোর লক্ষে যে সমন্বিত জ্ঞানের প্রতি মানুষ হরদম মুখাপেক্ষী তা একমাত্র ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমেই অর্জিত হয়। তাই দ্বীনি শিক্ষার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন।


طلب العلم فريضة على كل مسلم
অর্থাৎ দ্বীনি ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ

-বাইহাকী তাবুল ঈমান ৪:১৭৭


উক্ত হাদিসে দ্বীনি ইলম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যতটুকু ইলম শিক্ষা করার মাধ্যমে আল্লাহর বিধি নিষেধ বুঝে তার উপর আমল করতে পারা যায়। তাই যে, কোন মুসলমান জ্ঞানার্জন ব্যতীত নিজের জীবন বিধিসিদ্ধ পন্থায় পরিচালনা করতে পারে না। বলেই ইসলাম শিক্ষা দীক্ষার প্রতি এত বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।


সুন্দর সমাজ বিনির্মানে আলেম সমাজের ভূমিকা

মানুষ হলো আদর্শ রাষ্ট্র ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনের একটি অন্যতম উপাদান, আর ইহা তখনই যথাযথ উপাদান হিসাবে বিবেচিত হবে যখন সমাজের প্রত্যেকটি মানুষ নিষ্ঠা, সততা ও সুন্দর গুনাবলীর অধিকারী হবে। আর জাগতিক ও আধ্যাত্বিক শিক্ষার সমন্বয় ব্যতিত এ সকল গুনাবলী অর্জন করা সম্ভব নয়। ইতিহাস পর্যলোচনা দ্বারা আমরা দেখতে পাই যে, জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল বিভাগের সর্বোচ্চ চূড়ায় ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিতদের পদচারনা হয়েছে। যখনই নৈতিকতার বিরুদ্ধে কোন মতাদর্শ মাথা চারা দিয়ে উঠেছে, উলামায়ে কিরাম তা কঠোর হচ্ছে মোকাবিলা করেছেন। যখনই গ্রীক দর্শন তার উদ্ভট থিওরী নিয়ে সরলমনা মানুষের উপর প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টা চালিয়েছে তখন তার মোকাবিলায় আবুল হাসান আশআরী, ও আবু মান সুর মাতুরিদী এবং আল্লামা গাজালীর মতো বড় বড় দার্শনিক ইসলামের প্রতিরক্ষ করেছে। এবং দলিল প্রমানের পাহাড় রচনা করেছেন একের পর এক।

এমনিভাবে যে, চ্যালেঞ্জটি রোমান এম্পায়ার ও পারসিয়ান এম্পায়ারের পক্ষ থেকে আইন কানুন আকারে ধেয়ে আসছিল তার দাত ভাঙ্গা জবাব দিয়েছিলেন একদল উলামায়ে কিরাম যারা নেহায়েৎ গবেষনা ও বিশ্লেষনের মাধ্যমে ইসলামী আইনের ধারা-উপধারা রচনার মহান দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন। যাহা রোমান ও পারসিয়ান আইনের তুলনায় বহুগুন টেকসই। ও দালিলিক। আর এ সকল আই নজ্ঞ উলামায়ে কিরামের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের শীর্ষ চূড়ায় ইমাম আবু হানিফা (রহ.) যিনি রোমান ও পারসিয়ান এম্পায়ারে সীমান্ত এলাকায় বসে ইসলামী ফিকাহ ও আইন: শাস্ত্রের সংকলন ও বিন্যাসের কাজটি অত্যন্ত সুচারুরূপে সম্পাদন করেছেন। যার সুক্ষ গবেষানা ও মেধা দেখে যুগ যুগান্তরে বিশ্বের বড় বড় আইনজ্ঞরা হতভম্ব হয়ে গেছে।

এভাবেই জাতীর সকল অন্তিম মূহুর্তে যখনই নীতি নৈতিকতার বিপর্যয় ঘটেছে। মানবতা যখনই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে তখনই মানবতা বিরোধী সকল অপতৎপরতাকে যে সকল বীর কেশরী সৈনিকেরা কঠোর হস্তে দমন করেছেন, তারা আর কেউ নয় এই মাদ্রাসারই শিক্ষিত একদল আলেম সমাজ, তাই এ যুগশ্রেষ্ঠ বীর পুরুষদের কে সকল সমালোচনার উর্ধ্বে রেখে তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মনোভাব তৈরি করা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। অন্যথায় জাতি চরম দুরাবস্থার সম্মুখীন হবে যাহা থেকে উত্তরণের কোন পথই অবশিষ্ট থাকবে না।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url