হিল্লা বিয়ের নিয়ম, তিন তালাকের ফতোয়া ও হালালা বিবাহ কি?
প্রশ্ন ১। এক মহিলা তিন তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার পর ইদ্দত শেষে অন্যত্রে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু ঘটনাক্রমে মহিলাটি এক বছর পর দ্বিতীয় স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্তা হন। এই এক বছরে তাদের মাঝে এক-দু'বার নির্জনবাস হয়েছে। কিন্তু সহবাস হয়নি। এখন কি মহিলাটি প্রথম স্বামীর জন্যে হালাল হবেন? আর যদি সহবাস হওয়ার পূর্বেই দ্বিতীয় স্বামী ইন্তিকাল করেন, তাহলে এমতাবস্থায় কি মহিলাটি প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবেন?
প্রশ্ন ২। গ্রাম-গঞ্জে দেখা যায় যে, তিন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে বিবাহ করার সময় এরূপ শর্ত করা হয় যে, দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বিবাহের পর সহবাস শেষে স্ত্রীকে তালাক দিতে হবে। এরূপভাবে হিলার পদ্ধতি কি সহীহ?
উত্তর ১। তিন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী তার পূর্বের তালাকদাতা স্বামীর জন্য পরবর্তীতে হালাল হওয়ার জন্য দ্বিতীয় বিবাহের স্বামীর সাথে অবশ্যই সহবাস হতে হবে। স্ত্রী সহবাস ছাড়া শুধু দ্বিতীয় বিবাহ বা নির্জনবাস হলে বা দ্বিতীয় স্বামী মারা গেলেই সে তার প্রথম তালাকদাতা স্বামীর জন্য হালাল হবে না। অন্যথায় ওই স্বামীর সাথে তার বিবাহ সহীহ হবে না।
সুতরাং আলোচ্য সূরতে যেহেতু ওই তিন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর সাথে তার দ্বিতীয় স্বামীর এক বছরের মধ্যে নির্জনবাস হলেও সহবাস হয়নি অথবা দ্বিতীয় স্বামী সহবাসের আগেই মৃত্যুবরণ করেছে, তাই এ অবস্থায় সে তার পূর্বের তিন তালাকদাতা স্বামীর জন্য হালাল হবে না।
অবশ্য ওই পূর্বের স্বামী ছাড়া অন্য যেকোন পুরুষের সাথে তার বিবাহের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা বা বাধা নেই। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাসের কোন শর্ত নেই।
উত্তর ২। না, হালালা বিবাহের ক্ষেত্রে যদি দ্বিতীয় স্বামীর সাথে এরূপ শর্ত করা হয়। যে, বিবাহের পর সহবাস শেষে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিতে হবে, তাহলে তা সম্পূর্ণ নাজায়িয হবে। এরূপ শর্তদাতা এবং শর্তগ্রহীতার উপর মহানবী (সা.) অভিশাপ দিয়েছেন। এজন্য সকল পুরুষের উচিত, বিবাহের আগে বা পরে তালাকের মাসআলা ভালোভাবে জেনে নেয়া। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যতকিছুই হোক মুখে কোন অবস্থাতেই তালাক জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করবে না তাহলে বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক থাকবে।
[হাওয়ালা : সুরাহ বাকারা, আয়াত : ২৩০/ ফাতাওয়া আলমগীরী, ১ : ২৮২/ ফাতাওয়া শামী, ৩: ৪০৯]