ইসলামে ছবি তোলার বিধান ও ছবি অংকন করার বিধান
কোন প্রাণীর ছবি তোলাকে হাদিসে পাকে কঠোর হারাম কাজ বলা হয়েছে, এবং ছবির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আল্লাহর নবী লানত করিয়াছেন।
হযরত আবু তালহা (রাযি.) হইতে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন :
প্রিয় পাঠক! এখন কারো অন্তরে এই চিন্তার উদয় হতে পারে যে, তাহলে তো নাকে তৈল দিয়ে ঘরে ছবি টাঙ্গিয়ে ঘুম পারব। রূহ কবয করার ফেরেশতা ঘরে ঢুকবে না ভালই হল! “ফেরেশতাগণ প্রবেশ করেন না" কিন্তু যেসব ফেরেশতা মানুষের আমল লিপি বদ্ধ করেন, কিংবা মানুষের হেফাযতে নিয়োজিত অথবা রূহ কবয করার জন্য আসেন, তাহারা ইহার অন্তর্ভুক্ত নয়।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) হইতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিয়াছেন (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তায়ালার নিকট সব চাইতে কঠিন আযাব হইবে ছবি প্রস্তুত কারীদের।
(বুখারী, মুসলিম) হযরত আয়েশা (রাযি.) বর্ণনা করেন, একবার তিনি একটি গদি (বা আসন) খরিদ করিলেন, উহাতে প্রাণীর অনেক গুলি ছবি ছিল, যখন রাসূল (সা.) (বাহির হইতে) উহা দেখিলেন, দরজায় দাড়াইয়া গেলেন, ঘরে প্রবেশ করিলেন না, আমি তাঁহার চেহারায় ঘৃণার ভাব দেখিতে পাইলাম, হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন, তখন আমি বলিলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি (আমার গুনাহের জন্য) আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলের কাছে তওবা করিতেছি, বলুন তো আমি কি অপরাধ করিয়াছি? তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলিলেন : এই গদিটি কেন? আমি বলিলাম, আপনার বসার এবং বিছানা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য আমি উহা খরিদ করিয়াছি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলিলেন, এই সমস্ত ছবি যাহারা তৈয়ার করিয়াছে কিয়ামতের দিন তাহাদিগকে শাস্তি দেওয়া হইবে। এবং তাহাদিগকে বলা হইবে যাহা তোমরা বানাইয়াছ তাহাতে জীবন দান কর। অতঃপর বলিলেন, ফেরেশতাগণ কখনো এমন ঘরে প্রবেশ করে না, যেই ঘরে (প্রাণীর) ছবি থাকে। (বোখারী, মুসলিম)
প্রিয় পাঠক! উল্লেখিত হাদিস গুলো ছাড়াও আরো বহু সংখ্যক হাদিস রয়েছে, যে গুলোর দ্বারা কোন প্রাণীর ছবি তোলা কিংবা অংকন করার নিষেধাজ্ঞা প্রমাণিত হয়। তবে সমস্ত ওলামাদের ঐক্যমত যে, কোন প্রাণহীন বস্তু যেমন : ঘর বাড়ি, আসবাব পত্র, গাছ পালা ইত্যাদির ছবি তোলা অথবা অংকন করা জায়েজ আছে।