দাড়ি মুন্ডানো ব্যক্তির নামাজ কবুল হবে কি?

 

দাড়ি মুন্ডানো ব্যক্তির নামাজ কবুল হবে কি?

প্রশ্ন: আমরা জানি যে, দাড়ি মুণ্ডালে অথবা এক মুষ্টি থেকে ছোট্ট করলে শরীয়তের হুকুম তরক করা হয়।

কিন্তু আমাদের এলাকার জনৈক মাওলানা সাহেব বলেছেন, দাড়ি মুণ্ডানো লোকের কোন প্রকার নামাযই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না।

জানতে চাই, মাওলানা সাহেবের কথা কি কুরআন-হাদীস সম্মত?


উত্তর: কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ওয়াজিব। এক মুষ্টির কমে দাড়ি কাটা বা ছাঁটা কিংবা মুণ্ডানো সম্পূর্ণ নাজায়িয, হারাম ও কবীরা গুনাহ। দাড়ি কাটা এতটাই মারাত্মক গুনাহ যে, এতে অনবরত গুনাহ লেখা হতে থাকে। অর্থাৎ দাড়ি এক মুষ্টি না হওয়া পর্যন্ত দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা তার আমলনামায় দাড়ি না রাখার গুনাহ লিখা হতে থাকে।


হারাম ও কবীরাহ গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহ তা'আলার মহান হুকুম নামায পড়লে আল্লাহ তা'আলা তা যতটা কবুল করবেন, গুনাহের মধ্যে লিপ্ত হয়ে তা করলে, ততটা কবুল করবেন না। তবে দাড়িবিহীন অবস্থায় নামায পড়লে নামায আদায় হয়ে যাবে এবং নামায পড়ার যে দায়িত্ব ছিল তা থেকে মুক্ত হবে। কিন্তু মহান আল্লাহর নিকট নামাযের যে মহাপুরস্কার রয়েছে, তা পাওয়ার হকদার থাকবে না। এটাই তার নামায কবুল না হওয়ার অর্থ। অর্থাৎ তার নামায আদায়ের দ্বারা তার ফরজ যিম্মা আদায় হয়ে যাবে, তবে এর মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি লাভ করা যাবে না এবং এর মহান ফজীলত লাভ থেকে মাহরুম হবে।


এ অর্থে সেই মাওলানা সাহেবের কথা ঠিক আছে। তবে যেহেতু এর অর্থ এটা নয় যে, এভাবে নামায পড়লে ফরজ যিম্মাদারী আদায় হবে না, তাই এ অবস্থায়ও নামায বাদ দিতে পারবে না।


সুতরাং দাড়ি রাখেন না বলে নামাযও পড়বেন না- এটা ঠিক নয়। তাতে দু'টি অন্যায় করা হবে। দাড়ি না রাখা ও নামায না পড়া। এক্ষেত্রে নামায পড়লে অন্তত একটি ফরজতো আদায় হলো এবং সেই ফরজ পরিত্যাগের গুনাহ থেকে বাঁচা গেল। তবে দাড়ি কাটার গুনাহ থেকেও মুক্ত হয়ে নামাযকে আল্লাহর নিকট পুরোপুরি কবুল করানোর জন্য দাড়ি রাখার চেষ্টা করা তার কর্তব্য।


[হাওয়ালা: তিরমিযী শরীফ, ২:১০৫/ ফাতাওয়া আলমগীরী, ৫:৩৫৬/ ফাতাওয়া শামী, ৬:৭৫১]

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url